সূরা আত ত্বীন, অর্থ এবং ফজিলৎসমূহ

By Islam Hossain - March 24, 2021

সূরা আত-ত্বীন পবিত্র আল কুরআনের ৯৫ তম সূরা। এর আয়াত সংখ্যা ৮ (আট) টি। ত্বীন শব্দের অর্থ আঞ্জির বা ডুমুর। এই সূরাতে মহান আল্লাহর উপর ঈমান (বিশ্বাস) এবং সৎকর্মশীলতার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এই সূরাতে আল্লাহ প্রদত্ত কয়েকটি নিয়ামত বা অনুগ্রহের দোহাই দিয়ে ঈমান ও সৎকাজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যেহেতু মানবজাতি অনেক অনুগ্রহ দ্বারা ধন্য হয়েছে, সেহেতু তাদের উচিত আল্লাহর উপর ঈমান রাখা এবং সৎকাজ করা; নচেৎ তারা নীচ ও শাস্তিযোগ্যরূপে গণ্য হবে।



সূরা আত ত্বীন, অর্থ এবং ফজিলত-Islamic Life


সূরা আল-কাফিরুন অর্থসহঃ 

 بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ 
আল্লাহর নাম নিয়ে (আরম্ভ করছি), (যিনি) রহমান (--পরম করুণাময়, যিনি অসীম করুণা ও দয়া বশতঃ বিশ্বজগতের সমস্ত সৃষ্টির সহাবস্থানের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা অগ্রিম করে রেখেছেন), (যিনি) রহীম (--অফুরন্ত ফলদাতা, যাঁর অপার করুণা ও দয়ার ফলে প্রত্যেকের ক্ষুদ্রতম শুভ-প্রচেষ্টাও বিপুলভাবে সাফল্যমণ্ডিত ও পুরস্কৃত হয়ে থাকে)।

 

١  وَالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ 
 ভাবো ডুমুরেব, আর জলপাইয়ের কথা;

 

٢  وَطُورِ سِينِينَ  
আর সিনাই পর্বতের কথা,

 

٣  وَهَٰذَا الْبَلَدِ الْأَمِينِ  
আর এই নিরাপদ নগরের কথা!

 

٤  لَقَدْ خَلَقْنَا الْإِنْسَانَ فِي أَحْسَنِ تَقْوِيمٍ 
সুনিশ্চয় আমরা মানুষকে সৃষ্টি করেছি শ্রেষ্ঠ-সুন্দর আকৃতিতে।

 

٥  ثُمَّ رَدَدْنَاهُ أَسْفَلَ سَافِلِينَ  
তারপর আমরা তাকে পরিণত করি হীনদের মধ্যে হীনতমে,

 

٦  إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ فَلَهُمْ أَجْرٌ غَيْرُ مَمْنُونٍ  
তারা ব্যতীত যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করছে, তাদের জন্য তবে রয়েছে বাধা-বিরতিবিহীন প্রতিদান।

 

٧  فَمَا يُكَذِّبُكَ بَعْدُ بِالدِّينِ  
তবে কী যা এরপরে তোমাকে বিচারসন্বন্ধে মিথ্যারোপ করতে দেয়?

 

٨  أَلَيْسَ اللَّهُ بِأَحْكَمِ الْحَاكِمِينَ  
আল্লাহ্ কি বিচারকদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক নন?


ব্যাখ্যা এবং ফযিলৎ

এই সূরার শুরুতে আঞ্জির (ডুমুর), যয়তুন (জলপাই), সিনাই পর্বত এবং মক্কা শহরের কসম বা দোহাই দেয়া হয়েছে। আরবে সেই যুগে আঞ্জির ও জলপাই অত্যন্ত গুরুত্ববাহী দুটি ফল ছিল; খাদ্য ও অর্থকরী ফসল হিসেবে এর গুরুত্ব ছিল অসীম। 

সিনাই পর্বত হলো নবী হযরত মুসা (আ:) এর স্মৃতিবিজড়িত স্থান। আর মক্কা ছিল নবী হযরত ইব্রাহিম এবং ইসমাইল (আ:) এর স্মৃতিবিজড়িত জায়গা। তদুপরি পবিত্র কাবা ঘরের মর্যাদার কারণে এই শহরটি নিরাপদ শহর হিসেবে তৎকালে গণ্য হত; সেখানকার অধিবাসীরা যুদ্ধ ও লুন্ঠনের আশঙ্কামুক্ত ছিল। এসকল বিষয়ের দোহাই দেওয়ার পর বলা হয়েছে, মানুষ অত্যন্ত সুন্দর গড়নে সৃষ্ট হয়েছে। কিন্তু এদেরকেই আবার অত্যন্ত নিচে নামিয়ে দেয়া হবে যদি এরা স্রষ্টা ও প্রতিপালকের উপর বিশ্বাস না রাখে এবং ভাল কার্যকলাপ না করে। তদুপরি শেষ বিচারের দিন এদেরকে কঠিন বিচারের মুখোমুখিও হতে হবে। সমাপ্তিতে এও মনে করিয়ে দেয়া হয়েছে যে, মহান প্রভু কখনো কারো উপর অবিচার করবেন না; শুধুমাত্র সুবিচারই করবেন।


  • Share:

You Might Also Like

0 মন্তব্য বা কমেন্টস