জীবনের সমস্যা সমাধানে আল কুরআনের ভূমিকাসমূহ
মানুষ জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বিভিন্ন রকমের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, জাতীয়, আন্তর্জাতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, আধ্যাত্তিক দিকগুলোর অসংখ্য সমস্যায় পৃথিবীর মানুষ পতিত হয়। মহান আল্লাহ পৃথিবীতে তাঁর খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ সৃষ্টি করেছেন।
মানব্জাতিকে সৃষ্টি করে তাদের এমনি ছেড়ে দেননি। তাদের মধ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা এবং উন্নত চরিত্র ও আচরন সর্বোপুরি আল্লাহ তাআলার ইবাদত শিক্ষা দেওয়ার জন্য যুগে যুগে নবি ও রসুল প্রেরন করেছেন এবং তাদের কাছে তাঁর অহি সম্বলিত আস্মানি গ্রন্থসমূহ নাযিল করেছেন। এর সাথে সমস্থ নবী ও রসুলের মধ্যে শ্রেষ্ঠ রসুল ও নবি হিসেবে মুহাম্মদ (সাঃ) কে পাঠিয়েছেন। তাঁর নিকট যুগ ও সমাজের চাহিদা অনুযায়ী আয়াতসমূহ নাযিল হয়েছে এবং তিনি ঐ আয়াতগুলোর হুকুম নিজের জীবনে বাস্তবায়িত করেছেন।
ব্যক্তিগত জীবনেঃ মানুষ তাঁর স্বভাব চরিত্র, ধর্ম, বিশ্বাস, মিথ্যা, চুরি, ডাকাতি, মদ্যপান, ইত্যাদি দোষে ব্যক্তিগত জীবনে দোষী হতে পারে। আল-কুরআন মানুষকে ব্যক্তিগত জীবনের সমস্থ দোষ থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষন দিয়েছে।
পারিবারিক জীবনেঃ মানুষ পারিবারিক জীবনে বিভিন্ন সমস্যায় পতিত হয়। স্বামী-স্ত্রী, পিতা-মাতা, পুত্র কন্যা, ভাই-বোন ও অন্যান্য নিকটাত্মীয়সহ সকলের মধ্যে পারস্পরিক দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে কুরআন মজিদ বিধান দিয়েছে। কুরআন মজিদে ব্যভিচার ও অসামাজিক কর্মকান্ড চিরতরে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সামাজিক জীবনেঃ সমাজে বসবাস করতে গিয়ে মানুষকে অগনিত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যাবতীয় অনাচার-অত্যাচার, শোষণ, নির্যাতন, ঝগড়া-বিবাদসহ সব ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত হতে কুরআনে কঠোরভাবে নিশেধ করেছে। অপরদিকে সকলের প্রতি ইনসাফ ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য কুরআনে বিশেষভাবে তাগিদ দিয়েছে।
রাষ্ট্রীয় জীবনেঃ রাষ্ট্রীয় জীবনের সুখ-শান্তি নির্ভর করে সরকার ও প্রজা সাধারনের মধ্যে মধুর সম্পর্ক ও পারষ্পারিক সঙ্ঘতির উপর। রাষ্ট্র নাগরিকদের সকল চাহিদা নিশ্চিত করবে এবং নাগরিকগন রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত থেকে স্ব স্ব দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করবে। এরুপ পারষ্পরিক দায়িত্ব পালন ও অধিকার সংরক্ষনসহ জীবনের সার্বিক কল্যানের নির্দেশনা আল কুরআনে রয়েছে।
আন্তর্জাতিক জীবনেঃ মানুষের জীবনের শান্তি নির্ভর করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, রাষ্ট্র ও জাতির পারষ্পারিক সহযোগিতার উপর। কেননা পৃথিবীতে রয়েছে বিভিন্ন ধর্ম, সংষ্কৃতি, শিক্ষা ও সভ্যতা। তাই পরষ্পরের প্রতি সহনশীলতা ও মানব প্রেমের নীতি অনুস্বরন করতে বলেছে ইসলাম। সকল মানুষই আল্লাহ তায়ালার বান্দাহ ও আদমের সন্তান। অতএব, বিশ্বের সকল মানুষকে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ করা আল্লাহ তাআলার বিধান। বিনা কারনে দুনিয়ার যে কোন মানুষকে কষ্ট দেওয়া মহাপাপ।
0 মন্তব্য বা কমেন্টস